মেসির অসাধারণ ফ্রি-কিক, ইকুয়েডরকে উড়িয়ে সেমিতে আর্জেন্টিনা (ভিডিও)

মেসির অসাধারণ ফ্রি-কিক, ইকুয়েডরকে উড়িয়ে সেমিতে আর্জেন্টিনা (ভিডিও)

কোপা আমেরিকার শিরোপা ছোঁয়ার নেশায় বুঁদ লিওনেল মেসি। দেশকে কিছু এনে দিতে পারেননি। অথচ ট্রফি আর শিরোপা রাখার জায়গা নেই তার ব্যক্তিগত শো-কেসে। সবই ক্লাব ফুটবলের।

স্বদেশি কিংবদন্তি ম্যারাডোনা হতে হবে তাকে। খুশি করতে হবে আর্জেন্টাইনদের। স্প্যানিশদের নয়।  মনযোগ শুধুই কোপা আমেরিকায়।

এমন লক্ষ্য নিয়েই দলকে নিয়ে রোববার কোপা আমেরিকার চতুর্থ সেমি ফাইনালে ইকুয়েডরের মুখোমুখি হয়েছে আর্জেন্টিনা।

তার ফলও পেলেন মেসি। তার অসাধারণ নৈপুণ্যে ইকুয়েডরকে ৩-০ গোলে হারাল আর্জেন্টিনা। তিনটি গোলেই রয়েছে মেসির অবদান। অসাধারণ ফ্রি-কিক থেকে একটি করেছেন নিজেই। বাকি দুটো করিয়েছেন ডি পল ও  মার্টিনেজকে দিয়ে।

আর্জেন্টাইন কোচ কোচ স্কলানি আজ মাঠে নামান – গালিন্দেজ, হিনকাপি, আরবোলেদা, এসতাপিনান, গ্রুয়েজো, ভ্যালেন্সিয়া, মেনা, অ্যঞ্জেলো, মেন্দেজ, ফ্র্যাঙ্কো, পালাসিয়সকে।  রিজার্ভ বেঞ্চে লুকিয়ে রেখেছেন ডি মারিয়া, আগুয়েরোদের।

শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলে ইকুয়েডরকে চাপে রাখে আর্জেন্টিনা। পরীক্ষা নিতে থাকেন ইকুয়েডরের গোলরক্ষক গালিন্দেজের। যদিও বেশিরভাগ শটই লক্ষ্য বরাবর ছিল না।

২ মিনিটের মাথায় আর্জেন্টিনার প্রথম আক্রমণ প্রতিহত করেন গালিন্দেজ। ৫ মিনিটের মাথায় ইকুয়েডরের পোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন ডি পল, তবে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ১৪ মিনিটের মাথায় গোললাইন থেকে বল প্রতিহত করে দলের পতন রোধ করেন আরবোলেতা।

১৭ মিনিটে কর্ণার পায় আর্জেন্টিনা। কিক নেন মেসি। চমৎকার কিকে বল পান পেজেল্লা। বুক থেকে বল নামিয়ে ইকুয়েডরের পোস্ট লক্ষ্য করে শট নিলেও তা টার্গেটে ছিল না। ২০ মিনিটের মাথায় হলুদ কার্ড দেখেন ইকুয়েডরের অ্যাঞ্জেলো প্রেসিয়াদো।

২২ মিনিটের মাথায় গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করলেন খোদ মেসি। ইকুয়েডরের গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারলেন না মেসি। তার শট পোস্টে প্রতিহত হয়।

২৪ মিনিটের মাথায় অফসাইডের আওতায় পড়েন মেনা। ইকুয়েডরের আক্রমণ ভেস্তে যায়। ৩১ মিনিটের মাথায় হলুদ কার্ড দেখলেন ইকুয়েডরের ফ্র্যাঙ্কো।

অবশেষে উল্লাসে ভাসার উপলক্ষ পেল আলবিসেলেস্তেরা। ৪০ মিনিটের মাথায় মেসির পাস থেকে গোল করলেন ডি পল।  ১-০ গোলে লিড নিল আর্জেন্টিনা। ৪৪ মিনিটের মাথায় হলুদ কার্ড দেখেন এসতাপিনান।

গোলটি দেখুন –

 

৪৫ মিনিটে আর্জেন্টিনার ব্যবধান দ্বিগুন করার সুযোগ পান গঞ্জালেজ। কিন্তু মেসির মতোই ব্যর্থ হন তিনি।

রেফারি প্রথমার্ধে ৪ মিনিট সময় সংযোজন করেন। এই চার মিনিটে ইকুয়েডরের প্রাপ্তি একটি হলুদ কার্ড। যোগ করা শেষ মুহূর্তের আগে হলুদ কার্ড দেখেন ওতামেন্দি।

রেফারির বাঁশিতে বিরতিতে যায় দুই দল।

দ্বিতীয়ার্ধে সমতায় ফেরার ছকে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে ইকুয়েডর। দলকে শক্তিশালী করতে গ্রুয়েজোকে তুলে নিয়ে এসত্রাদাকে মাঠে নামায় কোচ হারনান দারিয়ো গোমেজ।

বদলি আনে আর্জেন্টিনাও। পালাসিয়সের বদলে মাঠে নামায় প্লাতাকে। ৫০ মিনিটে আর্জেন্টিনার ওপর আক্রমণ চালায় ইকুয়েডর। গঞ্জালেজের শট পোস্টের উপর দিয়ে মাঠের বাইরে চলে যায়।

৫৮ মিনিটে আর্জেন্টিনার দুর্দান্ত এক চেষ্টা ভেস্তে যায়। এসতাপিনানের শট প্রতিহত করেন মার্টিনেজ।

৬৬ মিনিটের মাথায় হলুদ কার্ড দেখেন গঞ্জালেজ। ৭০ মিনিটে ফ্র্যাঙ্কোকে তুলে নিয়ে সাইসেডোকে মাঠে নামায় ইকুয়েডর।

এর এক মিনিট পরেই সেলসো ও পারেদেসকে তুলে নিয়ে ডি মারিয়া ও রদ্রিগেজকে মাঠে নামান আর্জেন্টাইন কোচ স্কলানি।

৮৪ মিনিটে ফের সফল মেসি। এবার মেসির অস্ত্র লউতারো মার্টিনেজ। লিওর পাস থেকে বল ধরে ইকুয়েডরের জালে বল জড়িয়ে দেন মার্টিনেজ। ২-০ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। হাতে সময় তেমন নেই। অথচ একটি গোলও শোধ করা হয়নি। অনেকটাই মরিয়া হয়ে ওঠে ইকুয়েডর। কিন্তু আর্জেন্টিনার ছন্দময় ফুটবলের কাছে পরাস্ত হয় তারা।

৮৯ মিনিটের মাথায় ডি মারিয়াকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন ইকুয়েডরের হিনকাপি। ফ্রি-কিক পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা।

৯৩ মিনিটে স্পট কিক থেকে অসাধারণ এক গোল করেন মেসি। যা দেখার অপেক্ষায় ছিল ফুটবলবিশ্ব। শেষ মুহূর্তে হলেও ফুটবলপ্রেমীদের সেই আশা পূরণ করে দেন আর্জেন্টাইন খুদেরাজ। ৩-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে আর্জেন্টিনা।

রেফারির শেষ বাঁশিতে জয় নিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে আর্জেন্টিনা।

আপনি আরও পড়তে পারেন